Pages

কৃষি উপকরণ সারের সংজ্ঞা, বিভিন্ন প্রকার ও সারের বিবরণ।

সারের সংজ্ঞা:
উদ্ভিদের পুষ্টির উপাদান সরবরাহের উদ্দেশ্যে যে সকল সামগ্রী (জৈব, রাসায়নিক এবং অনুজীব) মাটিতে প্রয়োগ করা হয় ব্যাপক অর্থে তাকে সার বলে। সুনির্দিস্ট ভাবে সার বলতে প্রাকৃতিক উৎস বা রাসায়নিক উপায়ে কল কারখানায় প্রস্তুতকৃত দ্রব্য বুঝায় যা মাটিতে প্রয়োগ করলে উদ্ভিদের ফলন বৃদ্ধি করে।

বিভিন্ন সারের উদাহরণঃ
জৈব সারঃ        গোবর, খামারজাত সার মুরগীর বিষ্ঠা এবং কম্পোষ্ট।
রাসায়নিক সারঃ  ইউরিয়া, টিএপি, এমওপি, জিপসাম এবং বোরাক্স।
জীবানুসারঃ      রাইজোবিয়াম, এ্যাজোসপিরিলাম, শ্যাওলা, নীল- সবুজ শ্যাওলা।

বিভিন্ন প্রকার সার
ক্রমিক নং
সারের ধরণ
বিবরণ 
১।  অজৈব সার 
ভৌত বা রাসায়নিক কল কারখানার মাধ্যমে অজৈব লবন আকারে উৎপাদিত পুষ্টি উপাদানই অজৈব সার। অপর কথায় অজৈব সার হচ্ছে, প্রাকৃতিক বা কলকারখানায় উৎপাদিত দ্রব্যাদি যার মধ্যে গাছের বৃদ্ধি ও উন্নয়নের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে।   
২।
একক সার সাধারণত যে সার হতে একক মূখ্য পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় যেমন- নাইট্রোজেন, ফসফরাস বা পটাশিয়াম।   
৩। পূর্ণ সার
যে সারে উদ্ভিদের প্রধান ৩টি পুষ্টি উপাদান নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম রয়েছে।   
৪।   মিশ্র সার 
যে সার নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম এর মধ্যে কম পক্ষে ২টি উদ্ভিদ পুষ্টি উপাদান রাসায়নিক ভাবে মিশ্রিত অবস্থায় বা উভয় অবস্থায় থাকে।   
৫।
  যৌগিক সার 
এক ধরনের মিশ্রণ যা প্রস্তুতকালে এর পুষ্টি উপাদানগুলি পরস্পরের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে থাকে।   
৬।     মিশ্রিত সার
যে সারে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম এর মধ্যে যে কোন ৩টি উদ্ভিদ পুষ্টি উপাদান মিশ্রিত অবস্থায় থাকে। 
৭।
দানাদার সার  
নির্দিষ্ট আকারের কঠিন দানা আকৃতিতে প্রস্তুতকৃত সার।  
৮। 
আব্রিত সার 
এক ধরনের দানাদার সার যার উপর পাতলা আবরণ দিয়ে সারের বৈশিষ্ট্য ও গুণগত মান উন্নয়ণ করা হয়।   
৯।
ধীরে মুক্ত সার
এক ধরনের সার যার পুষ্টি উপাদান সমূহ রাসায়নিক যৌগ আকারে বা সরাসরি ভৌতিক আকারে থাকে, যাতে গাছের সারের লভ্যতা দীর্ঘ সময় বলবৎ থাকে।   
১০। 
গৌণ পুষ্টি সার যে সারে উদ্ভিদের গৌন পুষ্টি সমূহ বিদ্যমান যথা- দসত্মা, বোরন, আয়রণ, ম্যাংগানিজ, কপার, মলিবডেনাম বা ক্লোরিন। 
১১।
তরল সার সার যখন তরল বা ঘনীভূত অবস্থায় থাকে। তরল সার প্রস্তুতের প্রধান প্রধান উপাদানগুলি হচ্ছে এ্যামোনিয়া, এ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ইউরিয়া, ফসফরিক এসিড এবং পটাশিয়াম ক্লোরাইড।   
১২।    ঘনিভূত সার    দুই পর্বের সার যার কঠিন উপাদান গুলি তরল দ্রবনে দ্রবিভূত অবস্থায় থাকে।   
১৩। মাটির নিয়ন্ত্রক 
যে সকল পদার্থ মাটিতে যোগ করার ফলে মাটির ভৌত রাসায়নিক এবং জৈব ক্রিয়ার উন্নয়ন সাধন করে।   
১৪।
চুন জাতীয় উপাদান 
ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ এক ধরণের মাটির নিয়ন্ত্রক, সাধারণত অক্সাইড, হাইড্রোক্সাইড বা কার্বনেট আকারে থাকে এবং মাটির পিএইচ মান নিয়ন্ত্রন করে।   
১৫। ফিলার বস্তু
যে সকল দ্রব্যে কোন উদ্ভিদ পুষ্টি থাকেনা কিন্তু সার জাতীয় পদার্থে যোগ করে সারের পরিমান বৃদ্ধি এবং পাটল রোধ করা থেকে বিরত রাখে তাই সারের ফিলার বস্তু।   
১৬।
গুড়া সার
কঠিন পদার্থের অতি সূক্ষ দানা অবস্থা।  
১৭। জৈব উপাদান/ জৈব সার
কার্বন জাতীয় উপাদান, প্রধানত উদ্ভিদ এবং জীব জন্তুর উৎস হতে উৎপন্ন গাছের পুষ্টি সরবরাহের জন্য মাটিতে ব্যবহার করা হয়। 
১৮।
জীবাণু সার 
জৈবিক নাইট্রোজেন সংবন্ধন প্রযুক্তির মাধ্যমে শীম জাতীয় ফসলের ফলন আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব। নাইট্রোজেন সংযোজন সক্ষম জীবাণুকে সংগ্রহ ও সংবন্ধন করে এক ধরণের সার তৈরী করা হয় যা জীবাণু সার বা ইনোকুলাম নামে পরিচিত।   
 

Sample text

Sample Text

Sample Text